ফাস্টফুড খুব মুখরোচক খাবার। এতে থাকে মেয়ানিজ, ঘি, মাখন, নানান রকম মশলা।
অতিরিক্ত তেল, যা স্বাস্থ্যের জন্য সবসময় উপযুক্ত নয়। ফাস্টফুড হলো অতিরিক্ত পুষ্টিকর খাবার। যা শিশুদের জন্য দরকারী হলেও সব শিশুদের জন্য যৌক্তিক নয়। কিছু শিশু রয়েছে যারা বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী বেশী ওজন সম্পন্ন। পারিবারিকভাবে যাদের আত্মীয় স্বজনদের হার্টের অসুখ, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বি জমে খাবার প্রবণতা রয়েছে, তাদেরকে আরো বেশী সচেতন হতে হবে। এই ধরণের পরিবারের শিশুদেরকেও হতে হবে খুব বেশী সচেতন কারণ ছোট্ট বয়স থেকেও রক্তে চর্বি জমে যেতে পারে, বিশেষত যেসব শিশুদের খাবারের চাহিদা বেশী কিন্তু খেলাধুলা করার কোন সুযোগ নেই। শুধু বাসা আর ক্লাসের মধ্যেই বন্দী থাকে, ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব, মোবাইল ফোনের গেমস বা ভিডিও গেমস নিয়ে। এতে দৈহিক পরিশ্রমের অভাবে ছোটদের ওজন বেড়ে যায়। তাই ছোটদের ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য অবশ্যই খেলাধূলা করতে হবে।
আজকাল শিশুদের পুরো দেহের ওজনের থেকেও বেশী হয়ে গেছে তাদের বই খাতার ওজন। দৌঁড়ে ছোটরা বি ত হচ্ছে খেলার মাঠে আর দৌড়াদৌড়ি থেকে।
স্কুলের ক্লাস, কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা, অনেক রাত জেগে পড়া আবর সকাল হলেই ব্যাগ ঘাড়ে নিয়ে স্কুলে ছুটে যাওয়াটা হয়ে গেছে তাদের নিত্য দিনের রুটিন। এইভাবে যেসব শিশুদের জীবন চলতে থাকে, তারা অকালেই বৃদ্ধ হয়ে যায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসে, কম বয়সেই চলে আসে মানসিক অবসাদ। পরিণামে অকালেই হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস হতে পারে। হবেই এমন কোন বাধাধরা নিয়ম নেই। তবে হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে।
ছোটদেরও ডায়াবেটিস হতে পারে। তাই অধিক ওজন সম্পন্ন শিশুদেরকে ফাস্টফুড যতোটা পরিহার করা যায়, ততোই ভাল। আর যারা প্রচুর খেলার, দৌড়াদৌড়ি, ছুটোছুটির সুযোগ পায়, তাদের জন্য ফাস্টফুড ততোটা ক্ষতিকার নয়। তবে এই খাবারগুলো সীমিত হওয়াই ভালো। এসব খাবার হলো অতিরিক্ত পুষ্টিকর খাবার। আর যেসন শিশুদের হজম ক্ষমতা কম, তাদের অ্যাসিডিটি বা গ্যাসট্রিকের সমস্যাও হতে পারে। তাই ছোট্ট বন্ধু তোমরা সবুজ ও হলুদ শাক সব্জি, মৌসুমী ফল, বাসার তৈরী খাবার, বাসার তৈরী ফলের জুস যতোটা পারো খাও। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। দেহে বাড়তি ফ্যাট বা চর্বি জমবে কম। কোমল পানীয়, এ্যানার্জি ড্রিংকস যতোটা বাদ দাও। খেতে মজা পেলেও, দেহের জন্য খুব ক্ষতিকর। তাই নিজের ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য তোমরা মনোযোগী হও। সুস্থ্য সবল হলে তোমরা দ্বিগুণ উৎসাহে কাজ করতে পারবা।
ছোট্ট থেকেই তোমরা মনোযোগী হও নিজেদের প্রতি। তোমাদের জীবন হোক আলোকিত ও উজ্জ্বল।
ডাঃ ফারহানা মোবিন
এমবিবিএস (ডি.ইউ), পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন (পাবলিক হেল্থ),
পিজিটি (গাইনী এন্ড অবস্),
রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার (গাইনী এন্ড অবস্),
স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ,
ডায়াবেটোলোজি, বারডেম হসপিটাল।